ধ্যান কি ?

ধ্যান কি

 


 ধ্যান কি ?


"কোন বিষয়ে মনের কেন্দ্রীকরণের নামই ধ্যান। এক বিষয়ে একাগ্র করিতে পারিলে সেই মন যে কোন বিষয়ে হোক না কেন, একাগ্র করিতে পারা যায়।

আমরা অনেকেই মনকে আদুরে ছেলের মতো করিয়া ফেলিয়াছি। উহা যাহা চায়, তাহাই দিয়া থাকি। এইজন্য সর্বদা ক্রিয়াযোগের অভ্যাস আবশ্যক, যাহাতে মনকে সংযত করিয়া নিজের বশীভূত করা যায়। এই সংযমের অভাব হইতেই যোগের বিঘ্ন উপস্থিত হইয়া থাকে ও তাহাতেই ক্লেশের উৎপত্তি। এগুলি দূর করিবার উপায় – ক্রিয়াযোগের দ্বারা মনকে বশীভূত করা, মনকে উহার কার্য করিতে না দেওয়া।

ধ্যান কাহাকে বলে? ধ্যান হইল সেই শক্তি, যাহা আমাদের এই সব কিছু প্রতিরোধ ধ্যান কাহাকে বলে করিবার ক্ষমতা দেয়। প্রকৃতি আমাদের প্রলোভন দেখাইয়া বলিতে পারে, 'দেখ—কি সুন্দর বস্তু!! আমরা ফিরিয়াও দেখি না। তখন সে বলিবে,

এই যে কি সুগন্ধ, আঘ্রাণ কর। আমি আমার নাসিকাকে বলিব, ‘আঘ্রাণ করিও না। নাসিকা আর তাহা করিবে না। চক্ষুকে বলিব, ‘দেখিও না'। 

প্রকৃতি একটি মমভুদ কাণ্ড করিয়া বসিল; সে আমার একটি সস্তান হত্যা করিয়া বলিল, হতভাগা, এইবার তুই বসিয়া ক্রন্দন কর। শোকের সাগরে ডুবিয়া যা”। 

আমি বলিলাম, আমাকে তাহাও করিতে হইবে না। আমি উঠিয়া দাড়াইলাম, আমাকে স্বাধীন হইতে হইবে। ইহা মাঝে মাঝে পরীক্ষা করিয়া দেয় না। এক মুহূর্তের ধ্যানের ফলে এই প্রকৃতিতেই পরিবর্তন আনতে পারিবে। 

মনে কর, তোমার নিজের মধ্যে যদি সে ক্ষমতা থাকিত, তাহা হইলে উহাই কি স্বর্গসদৃশ হইত না, উইকি মুক্ত হইত না। ইহাই হইল ধ্যানের শক্তি।"


-স্বামী বিবেকানন্দ

বই:ধ্যান ও মনের শক্তি

Comments

Popular posts from this blog